ছয় দাবিতে সব পলিটেকনিক ‘কমপ্লিট শাটডাউন’
- আপলোড সময় : ২৯-০৪-২০২৫ ০৯:৩৩:৩২ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ২৯-০৪-২০২৫ ০৯:৩৩:৩২ অপরাহ্ন

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
রাজপথে আন্দোলনের পর ছয় দফা দাবিতে এবার সারা দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে চলছে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সকাল থেকে কারিগরি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ, এর ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করছেন সারা দেশে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা। পূর্ব ঘোষিত কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ও ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ পালন করছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা।
পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে এই কর্মসূচি শুরু হয়। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন। পরে ক্যা¤পাসের মেধা শহীদ চত্বরে শিক্ষার্থীরা এক সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী মাশফিক ইসলাম দেওয়ান বলেন, “বর্তমান প্রেক্ষাপটে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ আমাদের দাবি বাস্তবায়নের রূপরেখা প্রণয়নে কমিটি করে দিলেও কমিটির একটিমাত্র সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে; আমরা কোনো প্রকার সফলতা দেখছি না। আমরা কোনো প্রকার তথ্য পাচ্ছি না, ভবিষ্যতে আমাদের দাবিগুলো কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে- সেই বিষয়ে। কমিটি দ্রুত কাজ করছে না।”
তিনি বলেন, “এমন পরিপ্রেক্ষিতে সারা বাংলাদেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে আমরা একযোগে সাবধান কর্মসূচি পালন করছি। আমাদের দাবি বাস্তবায়নের রূপরেখা প্রণয়ন না হওয়া পর্যন্ত সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শাটডাউন থাকবে। প্রশাসনিক ভবন একাডেমিক ভবন তালাবদ্ধ থাকবে, ক্যা¤পাসে সকল প্রকার কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।”
এর আগে রবিবার ও সোমবার সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ এবং সব জেলার ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারস বাংলাদেশ (আইডিইবি) কার্যালয়ে নিজেদের দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন আন্দোলনকারীরা।
এক সপ্তাহের বেশি সময় নানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকার পর তাদের দাবি বাস্তবায়নের রূপরেখা প্রণয়নে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করলে গত ২২ এপ্রিল তারা আন্দোলন স্থগিত করে। তবে পরদিনই সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা আসে তাদের তরফ থেকে।
যে ছয় দাবিতে কারিগরি শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে আসছেন-
জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল করতে হবে। পাশাপাশি, ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর পদবি পরিবর্তন ও মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করতে হবে। ২০২১ সালে রাতের আঁধারে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের নিয়োগ স¤পূর্ণভাবে বাতিল এবং সেই বিতর্কিত নিয়োগবিধি অবিলম্বে সংশোধন করতে হবে।
উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও সমমানের (১০ম গ্রেড) পদ চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ও মনোটেকনোলজি (সার্ভেয়িং) থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও যেসব সরকারি, রাষ্ট্রায়ত্ত, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নি¤œস্থ পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পদে কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং তা আইনানুগভাবে নিশ্চিত করতে হবে। এ পদগুলোতে অনতিবিলম্বে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ এবং সব শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।
কারিগরি শিক্ষায় বৈষম্য ও দুরবস্থা দূর করার পাশাপাশি দক্ষ জনস¤পদ তৈরিতে ‘কারিগরি ও উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়’ নামে স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে।
পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে একটি উন্নত মানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি, নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁও) পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী ক্যা¤পাস ও ডুয়েটের আওতাভুক্ত অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আগামী সেশন থেকে শতভাগ সিটে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ